Tuesday, June 23, 2020

জ্ঞান পিয়াসুর আকাঙ্ক্ষা - কিতাবুত্ তাওহীদের ব্যাখ্যা - মূলঃ শায়েখ সালেহ্ বিন আব্দুল আযীয বিন মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম আলে শায়েখ





বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম


ভূমিকা


তাওহীদপন্থী আলেমগণ এই মর্মে একমত হয়েছেন যে, ইসলামে এই কিতাবুত্ তাওহীদ-এর মতাে আর কোন গ্রন্থ এ বিষয়ে রচিত হয়নি। এটি একটি দাওয়াতী (প্রচারের) গ্রন্থ। তাওহীদের পথের আহ্বায়ক। কারণ শায়খ (রহমাতুল্লাহি আলাইহ) এতে তাওহীদের মূল প্রমাণ সন্ধী বর্ণনা করেছেন। তাওহীদের অর্থ ও ফযীলত বর্ণনা করেছেন। তাওহীদের বিপরীত কি এবং তার ভয়াবহতা কেমন তা বর্ণনা করেছেন। তাওহীদে এবাদত এবং তাওহীদে আসমা ওয়াস্ সিফাত (আল্লাহুর নাম ও গুণাবলীতে একতুববাদ)-এর মৌলিকনীতি-মালা সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা করেছেন। সবচেয়ে বড় শিরক ও সবচেয়ে ছােট শিরকের বর্ণনা এবংসেগুলাের কিছু চিত্র তুলে ধরেছেন। প্রত্যেকটির উপায় ও মাধ্যম বর্ণনা করেছেন।
তাওহীদের সংরক্ষণ এবং কিভাবে তা সম্পন্ন হয় তা বর্ণনা করেছেন। তাওহীদে রুবৃবিয়্যার প্রকারও কিছুটা বর্ণনা করেছেন। এই গ্রন্থটি (কিতাবুত্ তাওহীদ) অত্যন্ত মহান একটি গ্রন্থ। তাই আপনি এটি মুখন্থ, অধ্যয়ন ও অনুধাবন করলে তা হবে একটি মহৎ কাজ। কারণ, আপনি যেখানেই থাকুন, আপনার এটি দরকার
হবে।
কিতাবুত্ তাওহীদঃ তাওহীদ হচ্ছে কোন জিনিসকে এক বলে সাব্যস্থ করা। মুসলিমগণ আল্লাহকে এক বলে সাব্যন্ত করেছেন। অর্থাৎ, উপাস্যকে তারা এক বলে সাব্য্ত করেছেন। তিনি হচ্ছেন পরাক্রমশালী মহান আল্লাহ্। আল্লাহর গ্রন্থে (কুরআনে) কাজিকিত তাওহীদ তিন প্রকারঃ তাওহীদে রুবৃবিয়্যাহ, তাওহীদে উলুহিয়যাহ ও তাওহীদে আসমা ওয়াসৃসিফা। তাওহীদে রুবুবিয়্যাহর অর্থ হল, আল্লাহকে তাঁর কার্যাবলীতে এক বলে সাব্যস্ত জীবিত করা। আল্লাহর কাজ অনেক। তন্মধ্যে রয়েছে সৃষ্টি করা, জীবিকা দেয়া, করা, মৃত্যুদান করা। পরিপূর্ণতার সাথে এগুলাের একচ্ছত্র অধিপতি হলেন মহান আল্লাহ। তাওহীদে উলুহিয়্যাহ্ বা ইলাহিয়্যাহ (শব্দ দুটি  ) ক্রিয়ার ক্রিয়ামুল বা মাছদার। এর অর্থঃ ভালবাসা ও শ্ৰদ্ধার সাথে ইবাদত বা উপাসনা করল এটি হল ; বান্দার কার্যাবলীতে আল্লাহকে এক বলে সাব্যস্ত করা। তৃতীয় প্রকার তাওহীদ হচ্ছে; তাওহীদে আসমা ওয়াস্ সিফাত। এর অর্থঃ বান্দার একথা বিশ্বাস করা যে, মহামহিম আল্লাহ্ তাঁর নামসমূহ ও গুণাবলীতে একক সন্ত্র, এদুটিতে তাঁর সমতুল্য আর কেউ নেই।
শায়খ (রহমাতুল্লাহি আলাইহ) এ গ্রন্থে তাওহীদের তিন প্রকার উল্লেখ করেছেন। যে সকল বিষয় মানুষের জন্য অতীব জরুরী এবং যে সকল বিষয়ে তারা কোন বই-পুস্তক পায় না সে সকল বিষয়ে বিশদ বিবরণ দিয়েছেন। আমার উদ্দেশ্য যেমন, তাওহীদে উলুহিয়্যাহ এবং ইবাদত তিনি এর প্রকারসমূহ বর্ণনা করেছেন।
যথাঃ তাওয়াকুল বা তরসা, ভয়-ভীতি, ভালবাসা...। এটির বিশদ বিবরণ দানের সময় তার বিপরীত বিষয় শিরকেরও বর্ণনা দিয়েছেন। শিরক হচ্ছে, মহাপরাক্রমশালী মহিয়ান আল্লাহর সাথে তাঁর প্রভূত্বে অথবা ইবাদত বন্দেগীতে অথবা নামসমূহ ও গুণাবলীতে অংশীদার সাব্যন্ত করা।
পবিত্র কুরআন ও সহীহ হাদীসে প্রমাণিত হয়েছে, এক বিবেচনায় শিরক দু'ভাগে বিভক্তঃ শিরকে আকবার বা সবয়েচে বড় শিরক ও শিরকে আসগার বা সবচেয়ে ছােট শিরক। আবার এক বিবেচনায় শিরক তিন প্রকার (১) শিরকে আকবার (২) শিরকে আসগার ও (৩) শিরকে খাফী বা গুও শিরক। শিরকে আকবার ইসলামের গণ্জী থেকে বের করে দেয়। এটি হচ্ছে, আল্লাহর সাথে অন্য কারাে ইবাদত করা অথবা আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারাে জন্য ইবাদতের কিছুটা হলেও সম্পন্ন করা, অথবা ইবাদতের ক্ষেত্রে আল্লাহর সাথে অংশীদায় স্থাপন করা।
শিরকে আসগার সেটিই যেটা শরীয়তদাতার বিচারে শিরক বলে গণ্য তবে এটি শিরকে আকবারের মতাে তীব্রভাবে নিন্দিত নয়। এই শিরকে আকবারের একটি হচ্ছে প্রকাশ্য। যেমন, মূর্তিপূজকদের শিরক, কবর ও মৃতদের পূজাকারীদের শিরক। অপরটি হচ্ছে গােপন যেমন, মুনাফিকদের (কপটদের) অথবা গুরু, পীর,
ফকীরদের অথবা মৃতদের অথবা বিভিন্ন উপাস্যের উপর নির্ভরকারীদের শিরক।
এদের শিরকাটি গুপ্ত কিন্তু বড়। তবে এটি দৃশ্যতঃ বড় নয় গােপনেই বড়। শিরকে আসগার যেমনঃ বালা, সুতা ও তাবীয ব্যবহার করা। আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারাে
মামে শপথ করা। শিরকে খাফী বা গও শিরক হচ্ছে সূক্ষ্ম রিয়াকারী বা দর্শনের ইচ্ছা প্রভৃতি।


১। এ প্রন্থে উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর সাথে তার ইবাদত বন্দেগীতে অংশীদার স্থাপন করতে নিষেধ
করা এবং তাঁর একত্ববাদের নির্দেশ দেয়া।

Disqus Comments